শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

রাজধানীতে ট্রাকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড
১৫ মার্চ, ২০২৩ ২০:৩৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৩ ২০:৩৩

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড় ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় জায়েদা আক্তার (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বাবা জাকির বলেন, ‘আমার মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। বাসার সামনে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড় ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় একটি দ্রুতগামী ট্রাক আমার মেয়েকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং মাথার পিছনের দিকে খুলি ভেঙে মগজ বের হয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

তিনি আরও জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা এলাকায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড় ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। দুই বোনের মধ্যে নিহত জায়েদা বড় ছিল।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মোহাম্মদপুর থানাকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছেন।’


ঢাকা দক্ষিণে ৪ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর

শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৪ ১২:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার সকাল ১০টার পর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে বঙ্গবাজারে এক সুধি সমাবেশে যোগ দেন তিনি।

চার প্রকল্প হলো, বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান’, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট গেট পর্যন্ত আট লেনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি (ইনার সার্কুলার রিং রোড)’, ধানমন্ডি হ্রদে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ।

১০তলা বিশিষ্ট বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতানে পাঁচটি সাধারণ সিঁড়ি ও ছয়টি অগ্নিপ্রস্থান সিঁড়িসহ পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বিপণিবিতানের প্রতিটি ব্লকের জন্য আলাদা বাহির ও প্রবেশদ্বার থাকবে। ভবনে বৈদ্যুতিক যান্ত্রিক কক্ষ এবং প্রতিটি ব্লকের প্রতি তলায় চারটি করে শৌচাগার থাকবে। এ ছাড়া ভবনের ভূমিতলে ১৬৯টি গাড়ি ও ১০৯টি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের সুবিধা থাকবে।

পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট গেট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আট লেনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণির নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৯৭৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার নর্দমা (ড্রেন), ১০ কিলোমিটার পথচারী হাঁটার পথ (ফুটপাত), ৩টি উড়াল সেতু (ভেহিকেল ওভারপাস), ৩টি পথচারী পারাপার সেতু (ওভারব্রিজ), দুই কিলোমিটার সংরক্ষণকারী দেওয়াল (রিটেইনিং ওয়াল), তিনটি মসজিদ, ছয়টি যানবাহন বিরতির স্থান (বাস-বে) ও ছয়টি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হবে। এতে ঢাকা শহরের ভেতরে বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমার পাশাপাশি বহুলাংশে যানজট নিরসন হবে।

নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ধানমন্ডি হ্রদে নজরুল সরোবর নির্মাণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি। এ ছাড়া শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের আধুনিকীকরণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৬০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই শিশু উদ্যানের আধুনিকায়ন করা হবে।


দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরোনো ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় কোনো কাঁচা বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সেই ব্যবস্থা করে দেবো। এই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি।’

পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের স্থানে ১০তলা বঙ্গবাজার পাইকারি মার্কেট, শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের আধুনিকায়নসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শনিবার সকালে এসব কথা বলেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে। কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না, আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিন মজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি।’

পরিবেশ রক্ষার গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের এক টুকরো জমি আছে তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। স্বাগত বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্‌রাহিম।


জন্মদিনে জাতীয় কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে।

জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে থাকা কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

কবির কবরে ফুল দিয়ে শুরুতেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল এবং ইনিস্টিউট। পরে সেখানে ফাতেহা পাঠ করা হয়।

এরপর বিএনপি পরে আওয়ামী লীগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, কবির পরিবার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, নজরুল গবেষণা কেন্দ্র, নজরুল একাডেমি, কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল চর্চা কেন্দ্র ‘বাঁশরী, বাসদ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এস মাকসুদ কামাল বলেন, ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সারা জীবন অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবিকতার চর্চা করেছেন এবং সাম্যবাদের পক্ষে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে কবিতা লিখে কারাভোগ করেছেন। তিনি মানুষের মুক্তির জন্য কথা বলেছেন, লিখেছেন। সেজন্য নজরুল সর্বকালের জন্য প্রাসঙ্গিক কবি। এই প্রাঙ্গিকতার কারণেই আমরা নজরুলকে ধারণ করি, চর্চা করি।’

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা যদি বিশ্ব সমাজকে দেখি, গাজায় আধিপত্যের নামে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। সেই হত্যা করা হচ্ছে একটি গোষ্ঠির ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার নামে, তাদের আধিপত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার নামে। সেজন্যে নজরুলের সাম্যের গান, তার প্রতিবাদ, তার যুদ্ধে যাওয়া আজও প্রাসঙ্গিক। আমাদের তরুণ প্রজন্মের মাঝে যদি আমরা এগুলো ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলেই আমরা নজরুল চর্চাকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে পারব।’

বিএনপি
দেশ এখন স্বৈরতন্ত্রের রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির মধ্যে আছে উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি ক্ষণ কবি নজরুল উদ্বুদ্ধ করছেন প্রতিবাদের জন্য।

নজরুলের বিপ্লবের গান, বিদ্রোহর গান আমাদের প্রাণিত করেছে, আজও উদ্বুদ্ধ করে। কবির কবিতা, গান এবং তার সমস্ত সাহিত্য সৃষ্টি আমাদের উদ্বুদ্ধ করছে শত নিপীড়ন নির্যাতন ভোগ করে আজকের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ করতে, এগিয়ে যেতে।’

গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে বিএনপি কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিবাদের ভাষা রপ্ত করেছে বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘সেই প্রতিবাদের ভাষা আমরা রপ্ত করে আমরা গণতন্ত্র ফেরানো, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের যে লড়াই আমরা অব্যাহত রাখছি। আমরা যখন কারাগারে যাই, যখন আমাদের বিচার হয় তখন আমরা নজরুলকে স্মরণ করি। কারণ আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি বলেই আমাদের সাজা দিচ্ছে, কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি, বিদ্রোহ বেদনার কবি, যৌবনের কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি। বাঙালি জাতির স্বাধিকার সংগ্রাম, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের প্রেরণার উৎস হচ্ছেন কবি নজরুল। যার কবিতা, গান স্বাধীনতা ও স্বাধিকার সংগ্রামে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা আজ তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু সেই বিজয়কে সুসংহত করার এখনো অনেক কাজ বাকি। বিজয়কে সুসংহত করার পথে বাধা দিতে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের কিছু সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি তৎপর। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটিত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়বো, সেটিই হবে নজরুলের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।’


কবির নাতনি খিলখিল কাজী
কবির কবরে ফুলের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন পরিবারের পক্ষ থেকে কবির নাতনি খিলখিল কাজী। তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই আমরা কবির জন্মদিনকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানিয়ে এসেছি। তবে এখনো সেটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। কেন করা হচ্ছে সেটি আমি জানি না।’

আপনারা কোনো সরকারি দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, না। আমরা কোনো লিখিত আবেদন করিনি। শুধু প্রতিবছর আপনাদের সামনে এসেই বলেছি।’

খিলখিল কাজী বলেন, ‘কবির রচনাবলি আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই রচনাবলিকে অনুবাদ করে বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এটি সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো ভাবেই করা যেতে পারে।’

কাজী নজরুলের ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ গানটি জাতীয়ভাবে গাওয়ার দাবি জানিয়ে খিলখিল কাজী বলেন, ভারতে এখনো তাদের জাতীয় কোন প্রোগ্রামে ‘জন গণ মন’ গানটির পাশাপাশি বন্দে মাতারাম গানটিও গাওয়া হয়। আমাদেরও উচিত যেকোনো জাতীয় প্রোগ্রামে কবির এই গানটি গাওয়া। কারণ এই গানটি দেশের মুক্তির চেয়ে মানুষের মুক্তির কথা বেশি বলেছেন।

তিনি বলেন, এই গানটি আমাদের আলোকিত পথে এগিয়ে যাওয়ার দিক নির্দেশনা দেয়। এই গানটি আমাদের মুক্তি এবং এগিয়ে যাওয়ার কথা বলে। যতই সংকট হোক, আমরা যেন কবির এই গান নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি। এই গানটি কবির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান বলেন, আজকে সারা বিশ্বে যেভাবে যুদ্ধ ও অশান্তি লেগে আছে নজরুল কিন্তু সবসময় এটার বিপক্ষে ছিলেন৷ অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে ছিলেন তিনি, সবসময় শান্তি চাইতেন৷ নজরুলের গানগুলো যদি আন্তর্জাতিকভাবে চর্চা করি, তাহলে বিশ্বকে শান্তির স্থানে নিয়ে যেতে পারব।

তিনি বলেন, আমরা চাইব, কবির যত গান, নাটক, রচনা রয়েছে তা কেবল ইংরেজি ভাষায় নয়, বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়৷ নজরুলের কবিতা ও গান নিয়ে আরও গবেষণা করা উচিত৷ নজরুলের গানের কপিরাইট সংরক্ষণের দায়িত্ব শুধু পরিবারের না, রাষ্ট্রেরও৷ নজরুলের গান যত তাড়াতাড়ি করে ফেলতে পারব, ততই ভালো৷ তাহলে দেশের সম্পদ দেশেই থাকবে৷


শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সুষম ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাসী: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

ছবি:সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সুষম ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে দুই দিনব্যাপী লিডারশিপ, টেকনোলজি অ্যান্ড ট্রেন্ডজ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ইনফোকম ঢাকা-২০২৪’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, দ্য ডেইলি স্টার, আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টার এবং জেসিআই বাংলাদেশের সহযোগিতায় ভারতের এবিপি গ্রুপ এ সম্মেলন আয়োজন করে। সম্মেলনে এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সাসটেইনেবল ডিসরাপশন’।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো উন্নয়নই মানবজাতির জন্য উপকারি হতে পারে না, যদি সেটা টেকসই না হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকার টেকসই উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমরা শুধু উন্নয়নেই বিশ্বাস করি না, আমরা সুষম ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করি। এ জন্য জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ অর্জনের অধিকাংশ সূচকে বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো করেছে। এটিই প্রমাণ করে শেখ হাসিনার সরকার টেকসই উন্নয়নে কতটা গুরুত্ব দেয়।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তনশীল। কিন্তু পরিবর্তিত প্রযুক্তি সমাজে ইতিবাচক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে কি না সেটাই মূল বিষয়। এটি জনগণের জীবন উন্নতভাবে গড়ে তুলছে- না ধ্বংস করছে, সেটিই বিবেচ্য। আমরা এখন ব্যাপকভাবে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রযুক্তির মাধ্যমে যেসব ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, সেগুলো আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই বড় ভাবনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এমনকি এসব ঝুঁকি মানব সম্প্রদায়ের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা বিশ্বাস করি প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলোই মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে যে পরিবর্তনগুলো ঘটছে, সেটাকে আমরা এখন টেকসই করার চিন্তা করছি। এটা ভালো একটা বিষয়। প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো কিছুর পরিবর্তনের ফলাফল যদি ইতিবাচক হয়, সেটাকে টেকসই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবনা।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তির বিশ্বে আমাদের ডাটা সুরক্ষায় যদি পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকে, তাহলে এ ক্ষেত্রে আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এ জন্য ডাটা ব্যবস্থাপনাসহ এ-সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে পুনরায় চিন্তা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রযুক্তির বিষয়টি মাথায় রেখেই একসঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন এক বিশ্ব তৈরির ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। এ বিষয়টি সব ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে। মানবতা, মানবাধিকার এবং মানুষের কল্যাণই মূল বিষয়। দেশ-রাষ্ট্র-নির্বিশেষে ভালো চিন্তার মানুষগুলোকে একত্রিত হতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য একসঙ্গে চেষ্টা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যত বেশি আমাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা একসঙ্গে চলতে পারব, তত ভালো আউটপুট তৈরি করা সম্ভব হবে এবং আমরা উন্নত বিশ্ব তৈরি করতে পারব। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের জনগণ উপকৃত হবে। তাই সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সুবিধা বিবেচনায় নিতে হবে।’


কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৪ ০০:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।

কাজী নজরুল ইসলাম চির প্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সম্পর্ককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?

‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে নজরুলের কবিতা ও গান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কবি নজরুল তার প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছেন। নজরুল সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।’

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় তিন দিনব্যাপী (২৫ থেকে ২৭ মে) অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে। এ ছাড়া সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানের নেতৃত্বে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

এ ছাড়া ময়মনসিংহ, জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ সম্প্রচার করবে। কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৭টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির চিরায়ত মনন ও চেতনার কবি। বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল প্রেম-দ্রোহ ও সাম্যের কবি হিসেবে পরিচিত। তার কালজয়ী লেখনিতে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মন্ত্র শাণিত ছিল। কুসংষ্কার, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কবি মানবতার জয়গান গেয়েছেন। ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কলম ধরে তিনি বাঙালির জাতীয়তা বোধের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন।

বিবৃতিতে তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, অনুরাগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আজ সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত নজরুল প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল সোয়া ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা শোভাযাত্রা নিয়ে সকাল সাড়ে ৬টায় কবির সমাধিতে যাবেন। পরে তারা জাতীয় কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন ও রুহের মাগফেরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ করবেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগৎকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি দেন।


সাগরে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে আজ

সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৪ ০৪:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলছে, আগামীকাল রোববার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।

‘রেমাল’ একটি আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ বালু। নামটি দিয়েছে ওমান। বঙ্গোপসাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে সেগুলোর নাম আগে থেকেই ঠিক করা থাকে।

গতকাল শুক্রবার সকালে নিম্নচাপ সৃষ্টির তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ জন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেতও দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, রেমাল বাংলাদেশের সুন্দরবন-সংলগ্ন খুলনা ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপকূলের দিকেই আঘাত হানতে পারে। এর বিস্তৃতি অপেক্ষাকৃত বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. শামীম আহসান বলেন, এখনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। গাণিতিক মডেলগুলো বলছে, এটি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশের উপকূলের দিকেই আসতে পারে। এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে।

নিম্নচাপ সংক্রান্ত প্রথম বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপটি গতকাল সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। গতিবেগ যদি ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে প্রবল ‘ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হয়, তখন সেটিকে ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে তা হয় ‘সুপার সাইক্লোন’।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, রেমাল আঘাত হানলে, তা প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তবে ‘সুপার সাইক্লোন’ হওয়ার আশঙ্কা নেই।


তৃতীয় ধাপে ৪২৯ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ মে। নির্বাচনি এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অন্যান্য অপরাধ রোধে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারের ৪২৯ কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

ফৌজদারি কার্যপ্রণালি আইন-২০০৯-এর ১০(৫) ধারা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা পেয়েছেন নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তারা। নিয়োগ পাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটদের ২৬ মে-র মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে যোগদানপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি। পাঁচ ধাপে এসব উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে দুই ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে বিরোধীদলগুলো অংশ না নেওয়ায় দলীয় প্রতীক ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটে কক্সবাজারে এক প্রার্থীর সমর্থক নিহত হন। অন্যদিকে, তৃতীয় ধাপে নরসিংদীর রায়পুরায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন প্রার্থী নিহত হওয়ায় ওই উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।


বিমান বাহিনীর ‘গার্ডেন বাই দি রানওয়ে’র উদ্বোধন

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান ‘গার্ডেন বাই দি রানওয়ে’ উদ্বোধন করেন। ছবি: আইএসপিআর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্দেশ্যে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর সংলগ্ন রানওয়ে লেকটি সংস্কারকরত ‘গার্ডেন বাই দি রানওয়ে’ নামকরণ করা হয়েছে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ শুক্রবার বাহিনীর সদরে (ইউনিট) অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। আজ শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী মহিলা কল্যাণ সমিতির (বাফওয়া) সভানেত্রী ও বিএএফ লেডিস ক্লাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তাহমিদা হান্নান। এ ছাড়া সহকারী বিমান বাহিনী প্রধানগণ, বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


যুক্তরাজ্যের লোওয়েস্টফ্টে প্রথম মেয়র হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাসিমা বেগম

নাসিমা বেগম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাজ্যের লোয়েস্টওফট টাউন হল থেকে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে নাসিমা বেগম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার সেখানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

নাসিমা বেগম সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের কামারখাল গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল হাশিমের মেয়ে। তার জন্ম যুক্তরাজ্যের লোয়েস্টওফট টাউনে। তিনি পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয়।

নাসিমা বেগম পড়ালেখা করেছেন লোয়েস্টওফট টাউনে। তখন থেকেই তিনি সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত হন। তিনি টানা তিনবার লোয়েস্টওফট টাউন হলের ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এই খবরে যুক্তরাজ্যের বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের বাংলা মিরর পত্রিকার সম্পাদক আবদুল করিম গণি হোয়াটসঅ্যাপে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আমাদের বাঙালিদের অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। নাসিমা বেগম মেয়র নির্বাচিত হয়ে বাঙালি কমিউনিটিতে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।’

মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ফেসবুক পোস্টে নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমি সব সময় চিন্তা করেছি যে টাউন কাউন্সিলের মতো একটি তৃণমূল সংস্থাকে সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে তা প্রতিফলিত করা প্রয়োজন। তাই সব বয়স ও ব্যাকগ্রাউন্ডের কাউন্সিলর থাকা গুরুত্বপূর্ণ। একজন তরুণ কাউন্সিলর হিসেবে, একজন নারী, একজন মা এবং একটি জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু থেকে কেউ—আমি মেয়র হিসেবে আমার সময় ব্যবহার করার চেষ্টা করব টাউন কাউন্সিলকে সমর্থন করার জন্য, লোয়েস্টওফটের সবার হয়ে কাজ করার জন্য।’

সবশেষ গত শুক্রবার নাসিমা বেগম কামারখাল গ্রামের বাড়িতে আসেন। তিনি বাবার কবর জিয়ারত ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ওই দিনই তিনি দেশ ত্যাগ করেন।

নাসিমা বেগমের চাচা আবদুল মালিক বলেন, ‘সময়–সুযোগ পেলেই নাসিমা দেশে আসে। সে মেয়র হওয়ায় আমরা গর্বিত।’
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল হাশিম বলেন, ‘নাসিমা আমাদের গর্ব। তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। ভবিষ্যতে দেশে এলে আমরা তাকে সংবর্ধনা দেব।’


হজ পালন করতে সৌদি পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ৯৯০ হজযাত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র হজ পালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৯৯০ যাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন তিন হাজার ৭৪৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন ৩৫ হাজার ২৪৩ জন। এ ছাড়াও এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৫৪৫টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে ৯৪টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৪৫টি, সৌদি এয়ারলাইনস ৩২টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে মক্কায় মো. মুরহাজুর রহমান খান নামে এক হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ বছর মোট পাঁচজন হজযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৫৪৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।


বিশ্ব শান্তির প্রশ্নে কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয়: ধর্মমন্ত্রী

রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শুক্রবার ‘বিশ্বশান্তি-ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। ছবি: পিআইডি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ন্যায্যতা, মানবাধিকার ও বিশ্বশান্তির প্রশ্নে কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, এরুপ আচরণ প্রকৃতপক্ষে ভালো ফল বয়ে আনে না।

আজ ‍শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘বিশ্বশান্তি-ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও এর জনগণের অধিকারের পক্ষে বাংলাদেশ সবসময় সরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে বাংলাদেশ সবসময় উচ্চকিত। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষে, ন্যায্যতার পক্ষে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসরায়েলের অবৈধভাবে ফিলিস্তিন দখলের নিন্দা জানায় এবং এটি বন্ধের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সোচ্চার ভূমকিা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং মধুর। এ কারণে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের প্রতি অব্যাহত সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে এবং এই সমর্থনের অংশ হিসেবে গত ৫৩ বছরে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ, যে দেশ তার পাসপোর্টে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করে রেখেছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমলিন উক্তি ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত-শোষক এবং শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে’ উদ্ধৃত করে ধর্মমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমাদের অবস্থান মাবনাধিকার ও ন্যায্যতার পক্ষে। আমাদের অবস্থান শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে। শোষক ও শোষিতের মধ্যে আমাদের অবস্থান সবসময় শোষিতের অনকূলে।

মো. ফরিদুল হক খান বলেন, ‘মক্কা ও মদিনার পর জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদকে ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের ২শ কোটি মুসলিমের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে জেরুজালেমের সম্পর্ক। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের ১৫ কোটির বেশি মুসলমানের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে জেরুজালেমের সম্পর্ক। মুসলমানদের এই অনুভূতিকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে, শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

তিনি ইসরাইল এবং তার মিত্রদেরকে আগ্রাসী চিন্তা-চেতনা ও কর্মকাণ্ড পরিহার করার আহ্বান জানান।

সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মো. আওলাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য বলরাম পোদ্দার, আইডিইবি’র সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোতালিব হোসেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ করিম প্রমুখ।

বিষয়:

আপৎকালীন খাদ্য মজুত থাকলে রিজার্ভ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপৎকালীন সময়ের খাদ্য মজুত থাকলে রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কোনো বিষয় নেই। রিজার্ভ বলতে বলতে মানুষকে এত সচেতন করে দিয়েছি, সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে, জিডিপি নিয়ে কথা বলে, এটা ভালো লক্ষণ। এখন মুদ্রাস্ফীতি কমাতে পারলে মানুষের স্বস্তি হতো। উৎপাদন যথেষ্ট হচ্ছে। কোনো অভাব নেই।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মুদ্রাস্ফীতি এখন সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, আমেরিকার অর্থনৈতিক রিপোর্ট দেখলাম সেখানেও মুদ্রাস্ফীতি বিরাট সমস্যা। অনেক দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, আমাদেরও। কারণ করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, আমদানি-রপ্তানি সব বন্ধ ছিল। তখন বাইরে থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেনি, তাই টাকাটা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে, তাই আমাদের রিজার্ভটা বেড়ে গিয়েছিল। তারপর যখন সবকিছু চালু হলো তখন খরচ, খরচ হবেই।

পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে অনেক খেলা হয়। আজ দেখলাম যেখানে আলু রাখে সেখানে ডিম রাখছে। আলুর কোল্ড স্টোরেজে ডিম রাখার কথা না। এ রকম ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে।

দেশের অর্জন ধরে রেখে সামনের দিকে এগোতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা না নিলে দেশটাকে আগাতে পারব না। এখানে যে বাধাগুলো আসে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের বিরোধী ছিল, এখনো তারা একটুও বদলায়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা এটা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।

এ সময় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিষ্টান দেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বাংলাদেশে এয়ার বেজ বানানোর জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে কোন দেশ এই প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি উল্লেখ করেননি প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার যুদ্ধ ঘরে-বাইরে সব জায়গায়। ওই অবস্থায় আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে ছেড়ে দিলাম। চক্রান্ত এখনো আছে। পূর্ব তিমুরের মতো বাংলাদেশের একটি অংশ নিয়ে... তারপরে চট্টগ্রাম, মিয়ানমার এখানে একটা খ্রিষ্টান দেশ বানাবে, বঙ্গোপসাগরে একটা ঘাঁটি করবে। তার কারণ বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। এ জায়গাটার ওপর অনেকেরই নজর। সেটা আমি হতে দিচ্ছি না। এটাও আমার একটা অপরাধ।

বিএনপি দেশে নির্বাচন হতে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে দেবে (নির্বাচন হতে দেবে), আমার ক্ষমতায় আসতেও অসুবিধা হবে না। যদি আমি বাংলাদেশে কারও এয়ার বেজ করতে দেই, ঘাঁটি করতে দেই তাহলে আমার কোনো অসুবিধা নেই। কোনো এক সাদা চামড়ারই প্রস্তাব। আমি একই জবাব দিয়েছি। আমি স্পষ্ট বলেছি, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে, আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, দেশের অংশ ভাড়া দিয়ে বা কারও হাতে তুলে দিয়ে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না, ক্ষমতার দরকার নেই। যদি জনগণ চায় ক্ষমতায় আসব, না হলে আসব না। এই কথাগুলো বললাম, কারণ সবার জানা উচিত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এখানে এয়ার বেজ করে কার ওপর হামলা করবে? যদি একটা দেশকে দেখানো হয়, সেটা তো না। আমি জানি আরও কোথায় যাবে। যে কারণে আমাদের সব সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, আরও হবে। কিন্তু এটা পাত্তা দেই না, সোজা কথা। দেশের মানুষ আমাদের শক্তি, মানুষ যদি ঠিক থাকে আমরা আছি।

বাংলাদেশের উন্নতি কারও পছন্দ হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে খাদ্য উৎপাদন করি, খোদ এক বড় দেশ বলে ফেলল, এত খাদ্য উৎপাদনের দরকার কী? আমাদের তো যথেষ্ট আছে, আমরা তো দিতে পারি। আমি বললাম হ্যাঁ, ওই আশায় আমি বসে থাকব! আমরা বলেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছেন, নিজের মাটি-মানুষ দিয়ে দেশ গড়ব। আমরা সেটাই করব। নিজেদের মানুষের খাবার এখানেই যতটুকু পারি উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তা দেব। আমরা দিয়েছিও সেটা। এই ধরনের কথা আছে।

সরকারপ্রধান বলেন, ৪৪ টেলিভিশনের মধ্যে প্রায় ৩৪টি চালু আছে। সবাই কথা বলে, টকশোতেও কথা বলে, সারা দিন সমালোচনা করে, এতগুলো সংবাদপত্র, এত কথা বলার পরে, সব কথার শেষ কথা, কথা বলতে দেওয়া হয় না। টেলিভিশনে সবাই যখন এইভাবে কথা বলে আমরা তো গলা টিপে ধরি না। কেউ বাধা দেয় না। যার যা খুশি বলে যাচ্ছে। তা সত্য-মিথ্যা যা হোক।

শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে যে যার মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সমালোচনা, মিথ্যা, অপবাদ। আর ভবিষ্যতে সমস্যা যেটা হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা, সেটা করা হচ্ছে। নজরদারিতে আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। শুধু আমরা না, উন্নত দেশগুলোও এ ব্যাপারে চিন্তিত। এআই মোকাবিলা করার প্রক্রিয়া খুঁজে দেখা হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ লাখের ওপরে মিয়ানমারের বস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। সেখানে খুবই খারাপ অবস্থা। এরা কবে যে ফেরত যাবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। আর প্রতিদিনই তাদের বাচ্চা হচ্ছে, সংখ্যা তাদের বেড়েই যাচ্ছে।

১৪ দলীয় নেতাদের উদ্দেশ শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের মতামত শুনব, আলোচনা করব। ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে এগোতে পারি এটাই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ হবে না। গ্রেনেড হামলাকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, দুর্নীতিবাজ যদি বিদেশের মাটিতে রোজই আন্দোলন, সরকার উৎখাতের নানা রকম হুমকি-ধমকি দেয়, যতক্ষণ জনগণ সঙ্গে আছে ততক্ষণ ওইটা কেয়ার করি না।

শেখ হাসিনা বলেন, তারপরও দেশে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ যেন না করতে পারে, যারা করবে তাদের ছাড় নেই। যতই মুরব্বি ধরুক, যাকে ধরুক এদের আমরা ছাড়ব না। মানুষের ক্ষতি যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, আর কেউ যাতে পিছিয়ে না নিতে পারে... আর পারবেও না। কারণ জনগণই আমাদের শক্তি।


১২০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানতে পারে ‘রেমাল’

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৪ মে, ২০২৪ ১০:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আগামীকাল শনিবার (২৫ মে) ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। পরের দিন রোববার সন্ধ্যায় ‘রেমাল’নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, ‘বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়েছে এবং বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ ও পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলে অবস্থান করেছে। কাল এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’

ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানা শুরু করতে পারে রোববার (২৬ মে) বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট থেকে সোমবার (২৭ মে) রাত ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে।এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে গভীর সাগরে বিচরণ করা জেলেদের নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে সংস্থাটি।

গতকাল এক সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর এ কথা জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপ সামান্য উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।

প্রাকৃতিক নানান কারণে সমুদ্রের কোনো কোনো স্থানে কেন্দ্রাভিমুখী ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সুস্পষ্ট লঘুচাপ হচ্ছে ঘণ্টায় ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হওয়ার অঞ্চল। নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।

কোনো ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।

'রেমাল' একটি আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ বালু। নামটি দিয়েছে ওমান। বঙ্গোপসাগরে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে সেগুলোর নাম আগে থেকেই ঠিক করা থাকে।

২০২০ সালে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়। সেখান থেকেই এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। যখন এই ঘোষণা আসবে তখনই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ নিম্নচাপটিকে ‍ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ হিসেবে অভিহিত করা হবে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে।

সাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপ থাকলেও দেশব্যাপী তীব্র গরম বিরাজ করছে। বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের ১৫ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে সর্বনিম্ন ১ থেকে সর্বোচ্চ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদী ও রাঙামাটিতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বিকেলে রাজধানী ও আশপাশের এলাকাজুড়ে প্রায় ঘণ্টা খানেক অঝোরে বৃষ্টিপাত হয়। এতে ভ্যাপসা গরম কেটে যাওয়ায় স্বস্তিবোধ করেন রাজধানীবাসী। তবে বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়কের কোথাও কোথাও পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ শুক্রবার থেকে সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি বাড়তে পারে।


banner close